দেশের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। চলতি অর্থবছরে (২০১১-১২) বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধি বা মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) অর্জনে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না। সরকার ৭ দশমিক ৩ লক্ষ্যমাত্রা ধরলে এ ক্ষেত্রে বড়জোর ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে। তার পরও আগামী ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার আরো নিচে নেমে আসতে পারে। আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হবে এবং মূল্যস্ফীতি হতে পারে ১০ শতাংশের কিছু বেশি। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে বিতর্ক লক্ষ করা যায় প্রতিবছরই। বিতর্ক রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়েও। গত বছর সরকারের দাবি অনুযায়ী বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ শতাংশ আর গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসের মতে, বড়জোর ৬ দশমিক ২ শতাংশ। এডিবির মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও যে সরকারের সঙ্গে মতানৈক্য সৃষ্টি হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে বাস্তবে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রায় সব ক্ষেত্রেই যে নেতিবাচক প্রবণতা বিরাজ করছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। চলতি অর্থবছর রপ্তানি ও আমদানি প্রবৃদ্ধি কমে গেছে অনেকাংশে। গত বছর রপ্তানি খাতে ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে অর্জিত হয়েছে মাত্র ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থবছর শেষে এ খাতে বড়জোর ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে। অনুরূপ প্রবণতা রয়েছে আমদানি খাতেও। আমদানি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ শিল্পোৎপাদন কমে যাবে।
ইতিমধ্যে কমেছেও। অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাবে বৈদেশিক বিনিয়োগসহ অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগও নেমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোঠায়। সরকার এর মধ্যে দফায় দফায় জ্বালানি তেলসহ গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহারও শিল্প খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। উচ্চ সুদের কারণে এর মধ্যে অনেক চালু শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে অথবা কোনো কোনোটি বন্ধের পথে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ ঘাটতির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে কৃষি খাতেও। সরকার ইতিমধ্যেই শিল্প খাতে বিদ্যুৎ সরবরাহের সময় বেঁধে দিয়েছে।
১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে এবং ব্যাংকের উচ্চ হারের সুদের টাকা নিয়ে উদ্যোক্তারা আর মৃতপ্রায় শিল্প-কারখানাগুলো টেনে নিতে চান না।
হাজি মো. রাসেল ভুঁইয়া
সিপাহীপাড়া খলিফাবাড়ী, মুন্সীগঞ্জ।
No comments:
Post a Comment