Saturday, April 21, 2012

চি ঠি প ত্র

বয়সসীমা
আমরা যাঁরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছি, তাঁদের সেশনজটের কারণে অনার্সসহ মাস্টার্স শেষ করতে ২৮-২৯ বছর বয়স হয়ে যায়। একবার কিংবা দুবার বিসিএস পরীক্ষা বা সরকারি অন্যান্য পরীক্ষা দিতেই শেষ হয়ে যায় চাকরির বয়স। পৃথিবীর উন্নত দেশ যেমন—যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় চাকরির বয়স ৩৫ বছর, এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চাকরির আবেদনের বয়স ৩৫ বছর। তারা আরও তিন বছর বাড়ানোর জন্য তাদের লোকসভায় আবেদন করেছে। সে জন্য আমাদের দেশের চাকরির আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। যেহেতু সরকার সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়েছে, সেহেতু চাকরির আবেদনের বয়সসীমাও পাঁচ বছর বাড়ানো হোক।
আশার কথা, জাতীয় সংসদে মাননীয় স্পিকার গত ১ ফেব্রুয়ারি ৭১ নম্বর বিধিতে জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের ওপর আলোচনার সময় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব করেন। আমরা আশা করব বিষয়টি সরকার দ্রুত সংসদে পাস করে উচ্চশিক্ষিত বেকারদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসবে। তা ছাড়া দেশের কলেজগুলোতে অনার্স কোর্স বেড়েছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়েছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয় বেড়েছে—সব মিলিয়ে উচ্চশিক্ষার একটি বহর বেড়েছে। অথচ সরকারের বা দেশের কর্মক্ষেত্র সেভাবে বাড়েনি। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য তাই আবেদনের বয়স বাড়ানোর বিকল্প নেই। পাশাপাশি সরকারি চাকরির বিভিন্ন কোটার কারণেও আমরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ওপরের বিষয়গুলো বিবেচনা করে সরকারকে চাকরির আবেদনের বয়স বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
আহমদ সুজাউদ্দিন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

বিপিএল
বিপিএল যখন চলছিল তখন গোটা দেশে একটা অন্য রকম উৎসবের আমেজ লক্ষ করা গেছে। যেখানে আমাদের দেশীয় খেলোয়াড়দের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সুপারস্টার খেলোয়াড়েরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। জীবিকার জন্য আমরা কেউ চাকরি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ করি। আর যাঁরা পেশাদারি ক্রিকেটার, এটাই তাঁদের জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম। এসব খেলোয়াড় আমাদের যেমন বিনোদন দেন, তেমনি দেশের জন্য বয়ে আনেন সম্মান। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কয়েক দিন ধরে পত্রিকায় বিপিএল নিয়ে সমালোচনা দেখে দুঃখ লাগছে। বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই নাকি এখনো তাঁদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক হাতে পাননি। আবার কিছু খেলোয়াড়ের চেক নাকি বাউন্স করেছে। ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তা হবে আমাদের দেশের জন্য লজ্জাকর। কেননা বিপিএলে অনেক বিদেশি খেলোয়াড় ছিলেন, যাঁরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত মুখ।
যাঁরা বিপিএল আয়োজন করেছেন এবং যাঁরা দল কিনেছেন, তাঁরা তো অবশ্যই অর্থের জোগান কীভাবে হবে এবং কীভাবে খেলোয়াড়দের অর্থ পরিশোধ করবেন—এসব দিক বিচার বিশ্লেষণ করেই দল কিনেছেন। তবে এখন কেন এত অনিয়ম করছেন, যা আমাদের জাতির জন্য সুনাম নয় দুর্নাম বয়ে আনছে। খেলোয়াড়দের টাকার লেনদেনে যদি এ রকম অনিয়ম হয়ে থাকে, যদি ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলো আমাদের পথ অনুসরণ করে, তাহলে বাংলাদেশের জন্য তা হবে লজ্জার এবং ভবিষ্যৎ বিপিএলের জন্য ভালো খেলোয়াড় জোগাড় করা কষ্টকর হয়ে যাবে। এতে খেলার মূল সৌন্দর্য নষ্ট হবে এবং বিপিএলের প্রতি দর্শকদের আকর্ষণ কমে যাবে।
কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ, খেলার স্বার্থে, বাংলাদেশের ভাবমূর্তির স্বার্থে খেলোয়াড়দের প্রাপ্য টাকা পরিশোধ করে আমাদের সুন্দর খেলা উপভোগ করার ব্যবস্থা করে দিন।
বাচ্চু, উৎপল, সবুজ, তানিয়া
লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ।

খাই খাইতন্ত্রের কালে
আনিসুল হকের চমৎকার লেখাটি পড়লাম। তিনি জানতে চেয়েছেন একজন রাজনৈতিক নেতার কত টাকা লাগে? আমার প্রশ্ন, একজন রাজনৈতিক নেতার কত টাকা আছে? যা কিনা ৪৭টি ব্যাংকের কোনো শাখায় রাখা সম্ভব নয়, নতুন করে ব্যাংক খুলতে হয়। তাঁদের হিসাব এনবিআরে দেওয়ার সময় ৪০০ কোটি টাকার হিসাব কি কেউ দিয়েছিলেন? এত তাড়াতাড়ি এত টাকা হলো কীভাবে? ছয় বছরে দ্বিগুণ হওয়ার স্কিম আছে, জানি। এখন দেখছি অনেক কম সময়েও চারগুণ হয়ে গেছে! আমরা সাধারণ মানুষ দেখছি আর একেকজনের জ্ঞানগর্ভ কথা শুনছি।
মাত্র কয়েক মাস আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পরিচালনা পর্ষদই অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অভিমত দিয়েছিল—নতুন ব্যাংক এখন দেওয়া যাবে না। ওই সময় সবকিছু বিবেচনা করে সম-আয়তনের দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে ব্যাংকের সংখ্যা ও শাখা বেশি বলে মত দিয়েছিল তারা। এখন তারাই সুর পাল্টে ফেলল। নতুন ব্যাংক স্থাপনের যৌক্তিকতা ও লাইসেন্স দেওয়ার পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বলা হলো, ‘নতুন ব্যাংক স্থাপনের মাধ্যমে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পাবে বলে প্রতীয়মান হয়।’
এখন নিশ্চয়ই বিএনপির নেতারাও আফসোস করছেন তাঁদের আমলে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে না পেরে। তবে হ্যাঁ, এর পরে কি আর ভুল করবেন? ৫৬টি ব্যাংক হলো। তারপর নিশ্চয়ই ৬৬টি হবে তাঁদের আমলে। কারণ, তাঁদের মতপার্থক্য যা-ই থাকুক না কেন, স্বার্থসিদ্ধির ক্ষেত্রে যে একই পথ বেছে নেন তাঁরা।
পরিশেষে আনিসুল হককে ধন্যবাদ জানাই মুস্তাক-মাহমুদা এবং হযরত আলীকে মনে করিয়ে দেওয়ায়। হতাশায় নিমজ্জিত হওয়ার শেষমুহূর্তে খড়কুটো ধরে মানুষ বাঁচতে চায়। আমাদের খড়কুটোর আশ্রয় যে এই সাধারণ মানুষগুলোর অসামান্য কাজকর্ম!
গুলনাহার ইসলাম
চট্টগ্রাম।

No comments:

EID MUBARAK to everybody