Saturday, April 21, 2012

খাবারে বিষ

খাবারে বিষ

বর্তমানে দেশে আম-জাম-কলা-কাঁঠাল, খেজুর, আনারস, আঙুর, মুড়ি, ডাল, পাটালি গুড়, দুধ, ঘি, তেল, মাছ-মাংস, গো-খাদ্য—সবকিছুতেই বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে খাওয়ানোর ফলে মানুষ ও পশু বিভিন্ন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। আম মোটাতাজাকরণ, পাকাতে এবং পচন রোধে ফরমালিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ফরমালিন কিডনি, লিভার ক্ষতি করাসহ মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করে। এ ছাড়া ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিতেও আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
সূত্রে জানা যায়, আম বড় হলে রং সুন্দর করতে ব্যবহার করা হয় সেভেন পাউডার। আম গাছ থেকে পাড়ার পর তা পরিষ্কার করতে ব্যবহার করা হয় নয়ন পাউডার। আম বেশিদিন সতেজ রাখতে ফরমালিন স্প্রে করা হয়। অনেক সময় গাছেই আমে ফরমালিন স্প্রেসহ ক্যালসিয়াম, ক্যালসিয়াম কার্বাইড এসব বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করার ফলে আমে হলদে রং আসে এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। বিষাক্ত খাদ্যের প্রভাবে নানা ধরনের দুরারোগ্য জটিল রোগের প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে রোগী এবং রোগীর আত্মীয়স্বজন চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। ভেজাল খাদ্যের কারণে সৃষ্ট এই সামাজিক ব্যাধি প্রতিকারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
উৎপাদিত প্যাকেটজাত করা প্রক্রিয়াজাত তরল ও কঠিন খাদ্যের অধিকাংশ খাদ্যই বিষ ও ভেজালে ভরপুর। বাজারে প্রায় সব ফলমূলে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত। ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম উপায়ে ফল পাকাতে এবং বেশিদিন সংরক্ষণ করতে কপার সালফেট, ক্যালসিয়াম, ক্যালসিয়াম কার্বাইড, পটাশের লিকুইট সলিউশন, কার্বনের ধোঁয়াসহ বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করছেন। বিষাক্ত ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও ফরমালিন মিশ্রিত খাদ্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এতে লিভার ও কিডনি নষ্ট হয় এবং ক্যানসারসহ বিভিন্ন মরণব্যাধি দেখা যায়। এসব বিষাক্ত দ্রব্য খেলে ২০২০ সালনাগাদ দেশে মরণব্যাধি মহামারি আকারে দেখা দেবে। বর্তমানে এ সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে বলে এক জরিপে জানা যায়। এ ব্যাপারে লিভার বিশেষজ্ঞ মোমিন খান, কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও কিডনি বিশেষজ্ঞ হারুন-অর রশিদ, ক্যানসার বিশেষজ্ঞ আকরাম হোসাইন, শিশু বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু নেফ্রোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন এবং ঢাকা শিশু হাসপাতালের চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন বলেন, দেশে মরণব্যাধি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধির জন্য ফলমূল ও খাদ্যদ্রব্যে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে বাজারজাত করাই দায়ী।
শুধু তাই নয়, দেশে আশঙ্কাজনক হারে প্রতিবন্ধী, বোবা, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, গর্ভাবস্থায় মা যে ফল, শাকসবজি, মাছসহ অন্যান্য খাবার খাচ্ছেন, ওই সব খাবারে অতিরিক্ত বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো থাকে; সে কারণেই এ ধরনের শিশুর জন্ম হচ্ছে। সময় থাকতে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তাঁরা। একজন সন্ত্রাসী একজনকে খুন করে একটি পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু ফলমূল ও খাদ্যসামগ্রীতে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে এরা জাতিকে একেবারে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এরা পেশাদার খুনির
চেয়েও ভয়ংকর!
হাফিজুর রহমান
বনওয়ারীনগর, ফরিদপুর, পাবনা।

কোচিংনির্ভর শিক্ষা
বর্তমানে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মান ঠিক কোন পর্যায়ে, এর সঠিক উত্তর আমরা কেউ দিতে পারব না। সর্বত্র এখন শিক্ষাব্যবস্থা কোচিং সেন্টারনির্ভর হয়ে পড়েছে। দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও মফস্বলে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে কোচিং সেন্টার। শিক্ষকেরা এখন শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের চেয়ে কোচিং সেন্টারে পাঠদানে বেশি আগ্রহী। ভালো স্থানে ভর্তি বা ভালো ফল করার আশায় মা-বাবা তাঁদের সন্তানদের কোচিং সেন্টারে পাঠান। এতে অভিভাবকেরা একদিকে যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশও তেমন ঘটছে না। আসলে বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থা অর্থনৈতিকভাবে নিছক এক ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে। শিক্ষকেরা যদি কোচিংয়ের কথা না ভেবে শ্রেণীকক্ষে মনোযোগের সঙ্গে পাঠদান করেন, তাহলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা উপকৃত হবেন। তা ছাড়া ছাত্রছাত্রীদের কোচিং সেন্টারকেন্দ্রিক শিক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। সর্বোপরি সরকারকেও এ ব্যাপারে সহযোগিতা ও নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
জাহেদুর রহমান
পুরানা পল্টন, ঢাকা।

No comments:

EID MUBARAK to everybody