ধরা যাক, হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁরাও এবার এসএসসি পরীক্ষা
দিয়েছিলেন। অনেক শিক্ষার্থীর মতো তাঁরাও নিজের ফলাফল জানিয়েছেন ফেসবুকে
স্ট্যাটাস দিয়ে। তাঁদের দেয়াল থেকে স্ট্যাটাসগুলো রস+আলোর পাঠকদের জন্য
নিয়ে এসেছেন রুবেল হাবিব
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৫ বছর বয়সী কিশোরের প্রথম কাব্যগ্রন্থ বনফুল বাহির হইতেছে। এই সংবাদের চাইতে অধিকতর আনন্দের সংবাদ আমার জীবনে আর দ্বিতীয়টি ঘটে নাই। ঘটিবে বলিয়া আশাও করি না। আজিকে আমার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হইয়াছে। আমি ৩ দশমিক ৬৩ পাইয়া কৃতকার্য হইয়াছি। তবে এই অর্জন আমাকে ছুঁইতে পারিতেছে না! কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের তুলনায় এই ঘটনা কিছুই নহে।
কাজী নজরুল ইসলাম
লেটোগান, নাকি পড়াশোনা? আমি লেটোগানকেই বেছে নেব! পরীক্ষার প্রতিটি খাতায় অত ভালো ভালো কয়েকটি গান-কবিতা লিখে দিলাম, মাস্টাররা বুঝলই না! তাই এফ গ্রেড পেয়েও চির উন্নত মম শির। আসুন, আমরা নিপীড়িতরা বলি—মহা বিদ্রোহী রণক্লান্ত/আমি সেই দিন হব শান্ত/যবে এফ-অলাদের ক্রন্দনরোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না/এ প্লাসধারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম, রণভূমে রণিবে না...
জীবনানন্দ দাস
বনলতা, পাখির নীড়ের মতো চোখ মেলে দেখো, কচি সবুজ বেতফলের মতো সদ্যই আমার এসএসসির ফলাফল বের হয়েছে! বি গ্রেড পেয়েছি আমি! কেন এমন করলাম? কারণ, স্কুলের মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই কলেজের রূপ খুঁজিতে যাই না আর! এক দণ্ড সময় হলে লাইক দিয়ো। সাথে একটা কমেন্টস, প্লিইইইইইইইইজ...! গালাগালি কোরো না, কে হায় হূদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
পরীক্ষার কেন্দ্রে বসিয়া বাংলা পরীক্ষার খাতায় দেবদাস-এর প্রথম অনুুচ্ছেদটা লিখিয়াছিলাম। আমার কাছে ওই অনুচ্ছেদের কোনো প্রতিলিপি নাই! খাতা ফেরত পাওয়ার কোনো উপায় আছে কি? বোর্ডের কর্মকর্তা কেহ আমার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকিলে ‘আওয়াজ দিয়েন’। আমার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল দয়া করে কেহ জানতে চাইবেন না।
জসীমউদ্দীন
পড়াশোনাকে কবর দিয়ে দিলাম। ‘কবর’ কবিতায় দুটো লাইন যোগ করতে হবে—এইখানে আমার পড়াশোনার কবর, স্কুলগেটের তলে/সারা জীবন ভিজিয়ে রাখব নর্দমারই জলে!
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
বিদ্যুতের অপরিসীম সংকটের মধ্যেও আমার পড়াশোনা চালাইয়া গিয়াছি। ফেসবুকে বসিবার সময় ল্যাপটপের যে আলো পাইতাম, সেই আলো দিয়াই দিব্যি বিদ্যা অর্জন করিয়াছি। তাই সবাইকে বলি, ফেসবুকের আলোয় আলোকিত হোন, ভালো ফলাফল অর্জন করুন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
নাউ আই অ্যাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত এসএসসি। মাই জিপিএ ইজ ফাইভ! ওয়েল ডান। থ্যাংকস গড। (ফেসবুকে প্রথম সনেট স্ট্যাটাস)
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
নারী জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুক অন্তঃপুরের অবরোধবাসিনীদের উন্মুক্ত বিশ্বে পদার্পণের অন্যতম মাধ্যম। ঘরে বসে আইফোনের মাধ্যমে আমি আমার বন্ধুদের জানাতে পারছি আমার এসএসসির ফলাফল। আমি জিপিএ ফাইভ পেয়েছি। সবাইকে আমার অন্দরমহলে মিষ্টি খাওয়ার নিমন্ত্রণ।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
কপিলা আমার পাশের সিটে বসে পরীক্ষা দিয়েছিল। আমার নিয়ে আসা সব নকল শুরুতেই ওকে দিয়ে দিয়েছিলাম। ও পাস করেছে, আর আমি...! হায়, কপিলা!
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-05-14/news/257471
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৫ বছর বয়সী কিশোরের প্রথম কাব্যগ্রন্থ বনফুল বাহির হইতেছে। এই সংবাদের চাইতে অধিকতর আনন্দের সংবাদ আমার জীবনে আর দ্বিতীয়টি ঘটে নাই। ঘটিবে বলিয়া আশাও করি না। আজিকে আমার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হইয়াছে। আমি ৩ দশমিক ৬৩ পাইয়া কৃতকার্য হইয়াছি। তবে এই অর্জন আমাকে ছুঁইতে পারিতেছে না! কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের তুলনায় এই ঘটনা কিছুই নহে।
কাজী নজরুল ইসলাম
লেটোগান, নাকি পড়াশোনা? আমি লেটোগানকেই বেছে নেব! পরীক্ষার প্রতিটি খাতায় অত ভালো ভালো কয়েকটি গান-কবিতা লিখে দিলাম, মাস্টাররা বুঝলই না! তাই এফ গ্রেড পেয়েও চির উন্নত মম শির। আসুন, আমরা নিপীড়িতরা বলি—মহা বিদ্রোহী রণক্লান্ত/আমি সেই দিন হব শান্ত/যবে এফ-অলাদের ক্রন্দনরোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না/এ প্লাসধারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম, রণভূমে রণিবে না...
জীবনানন্দ দাস
বনলতা, পাখির নীড়ের মতো চোখ মেলে দেখো, কচি সবুজ বেতফলের মতো সদ্যই আমার এসএসসির ফলাফল বের হয়েছে! বি গ্রেড পেয়েছি আমি! কেন এমন করলাম? কারণ, স্কুলের মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই কলেজের রূপ খুঁজিতে যাই না আর! এক দণ্ড সময় হলে লাইক দিয়ো। সাথে একটা কমেন্টস, প্লিইইইইইইইইজ...! গালাগালি কোরো না, কে হায় হূদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
পরীক্ষার কেন্দ্রে বসিয়া বাংলা পরীক্ষার খাতায় দেবদাস-এর প্রথম অনুুচ্ছেদটা লিখিয়াছিলাম। আমার কাছে ওই অনুচ্ছেদের কোনো প্রতিলিপি নাই! খাতা ফেরত পাওয়ার কোনো উপায় আছে কি? বোর্ডের কর্মকর্তা কেহ আমার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকিলে ‘আওয়াজ দিয়েন’। আমার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল দয়া করে কেহ জানতে চাইবেন না।
জসীমউদ্দীন
পড়াশোনাকে কবর দিয়ে দিলাম। ‘কবর’ কবিতায় দুটো লাইন যোগ করতে হবে—এইখানে আমার পড়াশোনার কবর, স্কুলগেটের তলে/সারা জীবন ভিজিয়ে রাখব নর্দমারই জলে!
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
বিদ্যুতের অপরিসীম সংকটের মধ্যেও আমার পড়াশোনা চালাইয়া গিয়াছি। ফেসবুকে বসিবার সময় ল্যাপটপের যে আলো পাইতাম, সেই আলো দিয়াই দিব্যি বিদ্যা অর্জন করিয়াছি। তাই সবাইকে বলি, ফেসবুকের আলোয় আলোকিত হোন, ভালো ফলাফল অর্জন করুন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
নাউ আই অ্যাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত এসএসসি। মাই জিপিএ ইজ ফাইভ! ওয়েল ডান। থ্যাংকস গড। (ফেসবুকে প্রথম সনেট স্ট্যাটাস)
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
নারী জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুক অন্তঃপুরের অবরোধবাসিনীদের উন্মুক্ত বিশ্বে পদার্পণের অন্যতম মাধ্যম। ঘরে বসে আইফোনের মাধ্যমে আমি আমার বন্ধুদের জানাতে পারছি আমার এসএসসির ফলাফল। আমি জিপিএ ফাইভ পেয়েছি। সবাইকে আমার অন্দরমহলে মিষ্টি খাওয়ার নিমন্ত্রণ।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
কপিলা আমার পাশের সিটে বসে পরীক্ষা দিয়েছিল। আমার নিয়ে আসা সব নকল শুরুতেই ওকে দিয়ে দিয়েছিলাম। ও পাস করেছে, আর আমি...! হায়, কপিলা!
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-05-14/news/257471
No comments:
Post a Comment